একড়ির এই পর্বটি অনুবাদ করতে গিয়ে চরিত্রের নাম ঠিক করতেই বেশি সময় লেগে গেছে। এই পর্বে একসঙ্গে অনেকগুলি চরিত্রের নাম এসেছে যাদের চলনসই বাংলা নাম ভেবে চিন্তে বের করতে অনেকদিন লেগে গেল। যেমন, Double Tooth, Wooden Dam, Rough Bark, Thousand Mouth, Wild Rose, Linden Tree. নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে, ওদের নামের সঙ্গে চরিত্রের কিছুটা মিল রেখেই নামেরও অনুবাদ করতে হবে, অনেকটা অ্যাসটেরিক্সের কলবিক্স, এটাসেটামিক্স, পচাইলিক্স প্রভৃতির মত। প্রথমে ভেবেছিলাম, যে কোনো একটা চলনসই নাম দিলেই হবে, পরে অনেক ভেবে দেখলাম, সেটা করা উচিত হবে না। তাই যখনই এই নতুন নতুন নাম সামনে এসেছে, কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিকঠাক নাম খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত এগোনো যায়নি। যদিও নামগুলো ততটা ভালো হয়নি, তবুও এর থেকে ভালো নাম আর খুঁজে পেলাম না।
একটা বিশেষ কথাঃ-
একড়ির এ পর্যন্ত তিনটি পর্ব অনুবাদ হল, আরও দশটি পর্ব বাকি, কিন্তু আগের দুটোর চেয়ে এই পর্বটা আমার বেশি ভালো লেগেছে। তার অন্যতম কারণ হল বীভার নাম এই প্রাণীটির কান্ডকারখানা। বস্তত, আমেরিকায় বিশেষভাবে এই প্রাণীটিকে দেখতে পাওয়া গেলেও আরও বেশ কিছু জায়গায় এই প্রাণীটাকে দেখতে পাওয়া যায় (Please see wikipedia)। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা আশ্চর্যতম প্রাণী হল এই বীভার। পিঁপড়ের মত এদের দলেও কঠোর অনুশাসন রয়েছে। যে এলাকায় এরা বসতি স্থাপন করে, তার আমূল বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম এই প্রাণীরা। গাছের ডাল, পাতা আর কাদা দিয়ে নদীতে এমন নিপূণ বাঁধ নির্মাণ করে জলাধার বানায়, যে অনুর্বর এলাকাও কালক্রমে উর্বর শস্যশ্যামলা হয়ে ওঠে। জলে-স্থলে অবাধ চলতে পারে এই অদ্ভুত জন্তুটির কীর্তি কলাপ সুকুমার রায় তার প্রবন্ধের মধ্যে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু দুঃখের কথা, মানুষের লালসা এই সুন্দর প্রাণীটিকে বিপন্ন করে তুলেছে।
যাই হোক, শেষে একটি কথা না বললেই নয়, এই পর্বে "বিছানা বীর" নামের একটি বীভারের উপস্থিতি আছে, যে কেবলই ঘুমায়, তবে বীভার আদপেই এরকম নয়। ওরা খুবই কর্মঠ এবং বিন্দুমাত্রও অলস নয়। সম্ভবত, কমিকসে হাস্যরসের আমদানির জন্যই লেখক এই চরিত্রের সৃষ্টি করেছেন বলে আমার অনুমান। আশা করি, সকলকেই এই পর্বটি ভালো লাগবে। আর যদি সম্ভব হয়, এই প্রাণীটিকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসুন। ধন্যবাদ সকলকে।